Dhaka ০৩:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জমি নিয়ে বিরোধ, ‘ধর্ষণ’ মামলার আসামি ১৫ বছরের শিশু!

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:১৪:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
  • ৮০ Time View

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি: জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে রমজান মোল্লা (১৫) নামের এক শিশুকে সাজানো ধর্ষণের অভিযোগ এনে সাজানো মামলায় আসামি করার অভিযোগ উঠেছে।

তবে মামলা দায়েরের আগে কোনো তদন্ত হয়নি বলে দাবি করেছেন ভূক্তভোগী পরিবার। এমন ঘটনা ঘটেছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা ইউনিয়নের দক্ষিণ ফুকরা গ্রামে।

শিশুর বাবা রবিউল মোল্যা জানান, ‘গত ৮ মাস যাবত সাড়ে ৪ শতাংশ জমি নিয়ে প্রতিবেশি আনিছ মোল্যার সাথে বিরোধ চলছিল। গত মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ওই জমির ওপর দিয়ে ডিশলাইনের তার নেওয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরের দিন বুধবার আবারও ওই জমির বাঁশ কাটা নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আনিছ মোল্যা তার স্ত্রী তানিয়া বেগমকে দিয়ে পরের দিন বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় শ্রেণির স্কুল পড়ুয়া শিশু কন্যাকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে রবিউল মোল্যার ছেলে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া স্কুলছাত্র রমজান মোল্যার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তদন্ত ছাড়াই শিশু রমজানকে নিজ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। একই দিন মামলা দায়ের শেষে পরের দিন আদালতের মাধ্যমে শিশু রমজানকে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠায় পুলিশ। বর্তমান ওই শিশু যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আছে।

এ বিষয় মামলার দুই নম্বর সাক্ষী ও বাদীর সবচেয়ে নিকটের প্রতিবেশি বেলি বেগমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি মামলার ঘটনা ও সাক্ষী সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমার নাম কে দিল তাও জানি না।’

এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, ধর্ষণ বা ধর্ষণচেষ্টার কোন ঘটনা ঘটেনি। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ঘটনা সম্পূর্ণ সাজানো ও মিথ্যা। তবে পুলিশের এক বড় কর্মকর্তার নির্দেশে এ মামলা হয়েছে।

মামলার বাদী তানিয়া বেগমের মুঠোফোনে কল দিলে তার স্বামী আনিছ মোল্যা ফোন ধরে বলেন, ‘এ বিষয় আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাচ্ছি না। এলাকাবাসী যেটা বলে, আপনি সেটা লিখেন। প্রয়োজন হলে থানায় গিয়ে জেনে নেন।’

কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন মামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘অভিযোগের প্রেক্ষিতেই মামলা হয়েছে। তদন্ত হবে, মিথ্যা হলে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা হবে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেই মামলা নেওয়া হয়ছে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জমি নিয়ে বিরোধ, ‘ধর্ষণ’ মামলার আসামি ১৫ বছরের শিশু!

Update Time : ০৯:১৪:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি: জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে রমজান মোল্লা (১৫) নামের এক শিশুকে সাজানো ধর্ষণের অভিযোগ এনে সাজানো মামলায় আসামি করার অভিযোগ উঠেছে।

তবে মামলা দায়েরের আগে কোনো তদন্ত হয়নি বলে দাবি করেছেন ভূক্তভোগী পরিবার। এমন ঘটনা ঘটেছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা ইউনিয়নের দক্ষিণ ফুকরা গ্রামে।

শিশুর বাবা রবিউল মোল্যা জানান, ‘গত ৮ মাস যাবত সাড়ে ৪ শতাংশ জমি নিয়ে প্রতিবেশি আনিছ মোল্যার সাথে বিরোধ চলছিল। গত মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ওই জমির ওপর দিয়ে ডিশলাইনের তার নেওয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরের দিন বুধবার আবারও ওই জমির বাঁশ কাটা নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আনিছ মোল্যা তার স্ত্রী তানিয়া বেগমকে দিয়ে পরের দিন বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় শ্রেণির স্কুল পড়ুয়া শিশু কন্যাকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে রবিউল মোল্যার ছেলে অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া স্কুলছাত্র রমজান মোল্যার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে তদন্ত ছাড়াই শিশু রমজানকে নিজ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। একই দিন মামলা দায়ের শেষে পরের দিন আদালতের মাধ্যমে শিশু রমজানকে কিশোর সংশোধনাগারে পাঠায় পুলিশ। বর্তমান ওই শিশু যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে আছে।

এ বিষয় মামলার দুই নম্বর সাক্ষী ও বাদীর সবচেয়ে নিকটের প্রতিবেশি বেলি বেগমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমি মামলার ঘটনা ও সাক্ষী সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমার নাম কে দিল তাও জানি না।’

এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, ধর্ষণ বা ধর্ষণচেষ্টার কোন ঘটনা ঘটেনি। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। ঘটনা সম্পূর্ণ সাজানো ও মিথ্যা। তবে পুলিশের এক বড় কর্মকর্তার নির্দেশে এ মামলা হয়েছে।

মামলার বাদী তানিয়া বেগমের মুঠোফোনে কল দিলে তার স্বামী আনিছ মোল্যা ফোন ধরে বলেন, ‘এ বিষয় আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাচ্ছি না। এলাকাবাসী যেটা বলে, আপনি সেটা লিখেন। প্রয়োজন হলে থানায় গিয়ে জেনে নেন।’

কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন মামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘অভিযোগের প্রেক্ষিতেই মামলা হয়েছে। তদন্ত হবে, মিথ্যা হলে তাদের বিরুদ্ধেও মামলা হবে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেই মামলা নেওয়া হয়ছে।’