Dhaka ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোপালগঞ্জে নতুন জাতের ‘ব্রি ধান-১০৭’ উদ্ভাবন, মেটাবে পুষ্টি চাহিদা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৪০:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
  • ১১৩ Time View

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: বাংলাদেশের মানুষের প্রধান খাদ্য ভাতের মাধ্যমে মানুষের দেহের পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এরইমধ্যে উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ প্রিমিয়াম কোয়ালিটির বোরো মৌসুমের একটি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-ব্রি।

ব্রি বলছে, নতুন উদ্ভাবিত ‘ব্রি-ধান ১০৭’ উচ্চ প্রোটিন ও অ্যামাইলোজ সমৃব্ধ। এ ধান থেকে তৈরি চালের ভাত খেলেই শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিন পাওয়া যাবে।

এ বছর ব্রি গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহযোগিতায় গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও বাগেরহাট জেলায় ২০টি প্রদর্শনী প্লটে ব্রি-ধান ১০৭ চাষাবাদ করেন ২০ জন কৃষক। এ ধান চাষে লাভবানও হয়েছেন তারা।

মাঠ পর্যায়ে সারাদেশে চাষাবাদের জন্য ২০২৪ সালে অবমুক্ত করা হয় উচ্চ প্রেটিন সমৃদ্ধ প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ব্রি ধান-১০৭। এ ধানের চালে অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৯.৩ ও প্রোটিনের পরিমাণ ১০.২ ভাগ। এটি একটি উচ্চ ফলনশীল বোরো মৌসুমের জাত। এছাড়া জাতটিতে রোগবালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ প্রচলিত যে কোন জাতের চেয়ে অনেক কম।

ধানটির জীবনকাল ১৪৮ দিন। হেক্টরে এ ধান ৮.১৯ থেকে ৯.৫৭ মেট্রিক টন ফলন দিতে সক্ষম। গোপালগঞ্জের মাঠে ব্রি ধান-১০৭ জাত ৮.৭৫ মেট্টিক টন ফলন দিয়েছে।

কোটালীপাড়া উপজেলার কৃষক জেভিয়ার হালদার বলেন, ‘আমি উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও নির্দেশনায় ৫২ শতাংশ জমিতে ব্রি ধান -১০৭ বপন করি। ধান কেটে ফসল মেপে দেখেছি, অন্যান্য ধানের থেকে বেশি উৎপাদন হয়েছে। এ ধান চাষ করে আমি অধিক ফলন পেয়ে লাভবান হয়েছি। বাজারে এ ধানের দামও ভালো পাওয়া যায়। আগামী বছর অনেক কৃষকই এ জাতের ধান আবাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’

কোটালীপাড়া উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনোজ কুমার মৃধা বলেন, ‘এ জাতের ধান আবাদ সম্প্রসারণে কাজ করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এতে দেশ খাদ্যে আরও স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে।’

গোপালগঞ্জ ব্রি’র আঞ্চলিক কার্যালয়ের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আমিনা খাতুন বলেন, ‘খোরপোষ কৃষিকে এ ধান বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তর ঘটাবে। ধানটির জীবনকাল ১৪৮ দিন। হেক্টরে এ ধান ৮.১৯ থেকে ৯.৫৭ মেট্রিক টন ফলন দিতে সক্ষম। গোপালগঞ্জের মাঠে ব্রি ধান-১০৭ জাত ৮.৭৫ মেট্রিক টন ফলন দিয়েছে। বিশাল জনগোষ্ঠির পুষ্টিহীনতা দূর করতে এ ধান ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

গোপালগঞ্জে নতুন জাতের ‘ব্রি ধান-১০৭’ উদ্ভাবন, মেটাবে পুষ্টি চাহিদা

Update Time : ০১:৪০:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: বাংলাদেশের মানুষের প্রধান খাদ্য ভাতের মাধ্যমে মানুষের দেহের পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এরইমধ্যে উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ প্রিমিয়াম কোয়ালিটির বোরো মৌসুমের একটি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট-ব্রি।

ব্রি বলছে, নতুন উদ্ভাবিত ‘ব্রি-ধান ১০৭’ উচ্চ প্রোটিন ও অ্যামাইলোজ সমৃব্ধ। এ ধান থেকে তৈরি চালের ভাত খেলেই শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিন পাওয়া যাবে।

এ বছর ব্রি গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের সহযোগিতায় গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও বাগেরহাট জেলায় ২০টি প্রদর্শনী প্লটে ব্রি-ধান ১০৭ চাষাবাদ করেন ২০ জন কৃষক। এ ধান চাষে লাভবানও হয়েছেন তারা।

মাঠ পর্যায়ে সারাদেশে চাষাবাদের জন্য ২০২৪ সালে অবমুক্ত করা হয় উচ্চ প্রেটিন সমৃদ্ধ প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ব্রি ধান-১০৭। এ ধানের চালে অ্যামাইলোজের পরিমাণ শতকরা ২৯.৩ ও প্রোটিনের পরিমাণ ১০.২ ভাগ। এটি একটি উচ্চ ফলনশীল বোরো মৌসুমের জাত। এছাড়া জাতটিতে রোগবালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ প্রচলিত যে কোন জাতের চেয়ে অনেক কম।

ধানটির জীবনকাল ১৪৮ দিন। হেক্টরে এ ধান ৮.১৯ থেকে ৯.৫৭ মেট্রিক টন ফলন দিতে সক্ষম। গোপালগঞ্জের মাঠে ব্রি ধান-১০৭ জাত ৮.৭৫ মেট্টিক টন ফলন দিয়েছে।

কোটালীপাড়া উপজেলার কৃষক জেভিয়ার হালদার বলেন, ‘আমি উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও নির্দেশনায় ৫২ শতাংশ জমিতে ব্রি ধান -১০৭ বপন করি। ধান কেটে ফসল মেপে দেখেছি, অন্যান্য ধানের থেকে বেশি উৎপাদন হয়েছে। এ ধান চাষ করে আমি অধিক ফলন পেয়ে লাভবান হয়েছি। বাজারে এ ধানের দামও ভালো পাওয়া যায়। আগামী বছর অনেক কৃষকই এ জাতের ধান আবাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’

কোটালীপাড়া উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনোজ কুমার মৃধা বলেন, ‘এ জাতের ধান আবাদ সম্প্রসারণে কাজ করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এতে দেশ খাদ্যে আরও স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে।’

গোপালগঞ্জ ব্রি’র আঞ্চলিক কার্যালয়ের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আমিনা খাতুন বলেন, ‘খোরপোষ কৃষিকে এ ধান বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তর ঘটাবে। ধানটির জীবনকাল ১৪৮ দিন। হেক্টরে এ ধান ৮.১৯ থেকে ৯.৫৭ মেট্রিক টন ফলন দিতে সক্ষম। গোপালগঞ্জের মাঠে ব্রি ধান-১০৭ জাত ৮.৭৫ মেট্রিক টন ফলন দিয়েছে। বিশাল জনগোষ্ঠির পুষ্টিহীনতা দূর করতে এ ধান ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।’